সোমবার, ০৬ অক্টোবর ২০২৫, ০১:০৯ পূর্বাহ্ন
ভয়েস নিউজ ডেস্ক:
নির্বাচন কমিশনের (ইসি) ক্ষমতা হ্রাস করে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের (আরপিও) সংশোধনীকে নিরপেক্ষ নির্বাচনের পথ রুদ্ধ করতে ক্ষমতাসীনদের ‘মহাপরিকল্পনার অংশ’ বলছে বিএনপি। তাদের দাবি, নির্বাচনের ছয় মাস আগে এই সংশোধনীর উদ্দেশ্য সুদূরপ্রসারী। আওয়ামী লীগের জয় নিশ্চিত করতেই এটি করা হয়েছে। ভবিষ্যতে ইসি পুনর্গঠন হলেও তারা যাতে কিছু করতে না পারে, সে জন্যই ক্ষমতাসীনেরা এটাকে ‘রক্ষাকবচ’ হিসেবে নিয়েছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকার নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এসব কথা বলেন। রিজভী বলেন, নির্বাচনী আইন লঙ্ঘনের কারণে নির্বাচন বাতিলের যে ক্ষমতা ইসির ছিল, তা কেড়ে নেওয়া হয়েছে। ফলে এই সংশোধনীর বলে ক্ষমতাসীনদের ক্যাডার, দলীয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও প্রশাসন দিয়ে সব কেন্দ্রে ভোট ডাকাতি, বলপ্রয়োগ, হাঙ্গামা, ভীতি প্রদর্শন ও চাপ সৃষ্টি করা হবে। আর নির্বাচন কমিশন দু-তিনটি কেন্দ্রে অনিয়ম হয়েছে বলে নাটক করে সে কেন্দ্রগুলোর ভোট বাতিল করলেও আওয়ামী লীগের জয় নিশ্চিত থাকবে—এটাই হচ্ছে তাদের নতুন ফর্মুলা।
বিএনপির এই নেতা বলেন, আগের গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশে বলা ছিল, ‘যেকোনো ভোটকেন্দ্র বা ক্ষেত্রমতো, সম্পূর্ণ নির্বাচনী এলাকায় নির্বাচনের যেকোনো পর্যায়ে ভোট গ্রহণসহ নির্বাচনী কার্যক্রম বন্ধ করিতে পারিবে।’ এটাকে সুকৌশলে বাতিল করে শুধু সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রের ভোট গ্রহণ (পোলিং) বাতিল করার মধ্যে কমিশনের ক্ষমতাকে সীমাবদ্ধ করা হয়েছে। এ ছাড়া সংশোধনীতে ‘ইলেকশন’ শব্দকে ‘পোলিং’ শব্দ দিয়ে প্রতিস্থাপন করা হয়েছে।
এর ব্যাখ্যা করে রিজভী বলেন, নির্বাচনের একটি পর্যায় হলো ‘পোলিং’। পোলিং অর্থ ভোটের দিন ভোট নেওয়ার সময়টুকুকে বোঝায়। আর ‘ইলেকশন’ অর্থ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা থেকে ফলাফলের গেজেট প্রকাশিত হওয়া পর্যন্ত পুরো সময়। সংশোধনীতে শুধু কেন্দ্রভিত্তিক ভোট বাতিলের ক্ষমতা রাখা হয়েছে। ফলে কেন্দ্রের বাইরে নির্বাচনী এলাকায় ভোটারদের বাধা, ভয়ভীতি প্রদর্শন বা বল প্রয়োগ করলে নির্বাচন কমিশনের কিছুই করার ক্ষমতা থাকল না।
রুহুল কবির রিজভী অভিযোগ করেন, যখন দেশি-বিদেশি সব মহল থেকে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু করার জোর দাবি উঠেছে, তখন নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতা কেড়ে নিয়ে সরকার আরও জোরালোভাবে একতরফা নির্বাচনের দিকে এগিয়ে গেল।
সংলাপ নিয়ে ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের বক্তব্যের সমালোচনা করেন রিজভী। তিনি বলেন, সংলাপ নিয়ে আওয়ামী লীগের নেতাদের পরস্পরবিরোধী বক্তব্যে তাঁরা জাতির কাছে তামাশার পাত্র হিসেবে বিবেচিত হয়েছেন। তাঁদের সংলাপের কথা মাটিতে পড়ার আগেই হাওয়ায় মিলিয়ে যায়।
বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারব্যবস্থা পুনঃপ্রবর্তনই হবে সংলাপ বা যেকোনো আলোচনার মূল ভিত্তি। কারণ, আওয়ামী লীগ দেশের সব গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান নির্বিকারে ধ্বংস করেছে। সুতরাং বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে সুষ্ঠু নির্বাচন আশা করা সূর্য পূর্ব থেকে পশ্চিমে ওঠার শামিল।
ভয়েস/জেইউ।